• Categories

  • Archives

  • Join Bangladesh Army

    "Ever High Is My Head" Please click on the image

  • Join Bangladesh Navy

    "In War & Peace Invincible At Sea" Please click on the image

  • Join Bangladesh Air Force

    "The Sky of Bangladesh Will Be Kept Free" Please click on the image

  • Blog Stats

    • 327,570 hits
  • Get Email Updates

  • Like Our Facebook Page

  • Visitors Location

    Map
  • Hot Categories

সিমলা চুক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার

॥ এবনে গোলাম সামাদ ॥

https://i0.wp.com/www.pppusa.org/images/B-29.jpg

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালের ৩ জুলাই। ১৯৭১ সালে ডিসেম্বর মাসের ১৭ দিনজুড়ে হয় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। এতে তদানীন-ন পূর্ব পাকিস্তানে জয়ী হয় ভারত। হারে পাকিস্তান। সিমলা চুক্তি অনুসারে যুদ্ধ বন্দীদের (POW) পাকিস্তানের হাতে ছেড়ে দেয়া হয়। এদের কাউকেই যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করা হয় না। এ ছাড়া সিমলা চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই রাজি হয় যে, ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে তার নিষ্পত্তি করতে হবে আলোচনার মাধ্যমে, কোনো যুদ্ধের মাধ্যমে নয়। চুক্তিটির নাম হয় সিমলা চুক্তি। কারণ এটি সম্পাদিত হয় ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলা শহরে। সিমলায় ভারত ও পাকিস্তান এই দুই দেশের প্রতিনিধিরা চুক্তির আগে দিয়ে করেন আলোচনা সভা, যা ইতিহাসে খ্যাত হয়ে আছে সিমলা সম্মেলন হিসেবে। এই সম্মেলনে ভারতীয় পক্ষের নেতৃত্ব দেন ভারতের তদানীন-ন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী। আর পাকিস্তানের পক্ষের নেতৃত্ব করেন তদানীন-ন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ জুলফিকার আলী ভুট্টো। এই সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাকাই হয়নি। বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি এর একটা কারণ ছিল, জুলফিকার আলী ভুট্টোর আপত্তির কারণে। ভুট্টো আপত্তি তোলেন, ১৯৭১-এর যুদ্ধ হয়েছে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। বাংলাদেশ নামে তখন কোনো রাষ্ট্র ছিল না।
পাকিস্তান বাংলাদেশের সাথে কোনো যুদ্ধ করেনি। যুদ্ধ করেছে ভারতের সাথে। ঢাকায় রমনার মাঠে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের সেনাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজী ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করেন কেবল ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের কোনো সেনানায়কের কাছে পৃথকভাবে আত্মসমর্পণ করেননি। তাই সিমলা সম্মেলনে বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধি থাকতে পারে না। যুদ্ধ বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে হয়নি। হয়েছে কেবল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। জুলফিকার আলী ভুট্টোর কথায় যুক্তি ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় পরাজিত হয়েছিল জার্মানি। জার্মান সৈন্য পৃথকভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সেনাপতিদের কাছে। অন্য দিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেট ব্রিটেন, চীন, নেদারল্যান্ডস, আস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কাছে পৃথক পৃথকভাবে। অন্য দিকে ১৯৭১-এ পাক বাহিনী কেবলই তদানীন-ন পূর্ব পাকিস্তানে আত্মসমর্পণ করেছিল এককভাবে ভারতীয় বাহিনীর কাছে। ভারত সে দিন বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সেনাপতি জেনারেল মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানীকে আসতে দেয়নি রমনার মাঠে। যে কারণেই হোক, তাকে আটকে রাখা হয়েছিল কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্টে। ভারত কেন এটা করেছিল তার কোনো ব্যাখ্যা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। আর এর ফলে ১৯৭১ সালে যুদ্ধ খাতাপত্রে পরিচিত হয়ে আছে কেবল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হিসেবে। যদিও ১৯৭১ সালের যুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়া পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধে কখনই ভারতের পক্ষে জেতা সম্ভব হতো না।

১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে যে যুদ্ধ হয়, তা শেষ হয় ১৬ ডিসেম্বরে। ভারত একপক্ষীয়ভাবে ১৭ ডিসেম্বর ঘোষণা করে পশ্চিম পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি। ভারতের ব্রিগেডিয়ার আর এন মিশ্র যুদ্ধশেষে সাংবাদিকদের বলেন, মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া বাংলাদেশে যুদ্ধে জেতা সহজ হতো না। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। তাই আমরা যুদ্ধে বিজয়ী হতে পেরেছি। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের বলেছে কোথায় কিভাবে পাক বাহিনী যুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা দিয়েছেন আমাদের গোপন সংবাদ। এসব সংবাদ যুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যকে বিশেষভাবে সাহাষ্য করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ভারতীয় সৈন্যকে করেছে খাদ্য সরবরাহ। নৌকা দিয়ে সাহায্য করেছে নদী পার হতে। তাদের সাহায্য-সহযোগিতা ভারতের সেনাবাহিনীকে দিয়েছে মনোবল, দিয়েছে গতি। আর তাই ভারতীয় সৈন্য মরেছে কম। অনেক সহজেই যুদ্ধ করতে পেরেছে পাক বাহিনীর সাথে। মিশ্রর এই বিবৃতি থেকে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে ১৯৭১ সালের লড়াইয়ের চেহারা। কিন্তু পাক বাহিনী যেহেতু আত্মসমর্পণ করেছিল কেবল ভারতীয় সেনাদের হাতে, তাই যুদ্ধটা বিশ্ববাসীর কাছে এ সময় খ্যাত হয় কেবল পাক-ভারত যুদ্ধ হিসেবে। আর সিমলা চুক্তি সম্পন্ন হয় কেবল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এতে বাংলাদেশ কোনো অংশ নিতে পারে না। কেন ১৯৭১-এর যুদ্ধে ভারত মুক্তিযুদ্ধের অধিনায়ককে রমনার ময়দানে আসতে দেয়নি সেটা আমরা বলেছি, এখনো আছে রহস্যময় হয়ে। তবে এর একটা কারণ হতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৩ ডিসেম্বর তাদের বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ এন্টারপ্রাইজকে বাহরাইন থেকে পাঠায় বঙ্গোপসাগরে। অন্য দিকে ভিয়েতনাম থেকে পাঠায় তাদের সপ্তম নৌবহরের একাধিক জাহাজ। এ সময় আমি ছিলাম কলকাতায়। কলকাতায় মানুষকে বলতে শুনেছি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিক্সন নাকি বলেছেন তদানীন-ন পূর্ব পাকিস্তানে যুদ্ধ থামাতে। না হলে মার্কিন সৈন্য অবতরণ করবে তদানীন-ন পূর্ব পাকিস্তানে। তারা ধরে নেবে পূর্ব পাকিস্তান হচ্ছে পাকিস্তানের অংশ। পাকিস্তানের সাথে আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন সামরিক চুক্তি। যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানকে প্রতিরক্ষার ব্যাপারে সাহায্য করতে বাধ্য। মার্কিন চাপ ১৯৭১- এর ডিসেম্বরের যুদ্ধকে প্রশমিত করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি পৃথক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনে। তার ছিল ভিন্ন রকম পরিকল্পনা। সে ভেবেছিল বাংলাদেশে অনেক সহজে সে তার প্রভাব বিস্তার করতে পারবে। আর বাংলাদেশ হবে পাকিস্তানের চেয়ে তার অনুগত রাষ্ট্র। শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতি করেছেন মার্কিন সমর্থনে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাই ধরেই নিয়েছিল একটা পৃথক বাংলাদেশ হবে তার জন্য বিশেষ সহায়ক রাষ্ট্র; বৈরী রাষ্ট্র নয়। ১৯৭২ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে। এর মূলেও ছিল মার্কিন চাপ। ভারত স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ থেকে তার সৈন্য সরায়নি। মার্কিন চাপেই সে বাধ্য হয় সৈন্য সরিয়ে নিতে। এসব কথা শুনেছি, একাধিক লোকের মুখে, কলকাতা থেকে দেশে ফেরার পর।

https://i0.wp.com/www.instablogsimages.com/images/2008/12/03/indo-pakistani_war_1971_submarine_syVe7_16298.jpg

সোভিয়েত জাহাজ থেকে টর্পেডো ছুড়ে ডুবিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানের ডুবোজাহাজ গাজীকে

আমি চাকরি করতাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে অনেক অধ্যাপকের কাছে অনেক কথা শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন পাকিস্তানের সমর্থক অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থক অধ্যাপক। আর ছিলেন ভারতের সমর্থক অধ্যাপকও। নানা রকম আলোচনা শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় মহলে। এ থেকে যে ধারণা আমার মনে গড়ে উঠেছে, তা হলো ১৯৭১-এর যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত থেকেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপ খুবই প্রবলভাবে। ১৯৭১-এর যুদ্ধের গতি প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ করতে হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে করা যায় না। অন্য দিকে ১৯৭১-এ হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে বিশেষ মৈত্রী চুক্তি। এই যুদ্ধে তদানীন-ন সোভিয়েত ইউনিয়নেরও ছিল বিশেষ ভূমিকা। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতকে যুদ্ধে সাহায্য করেছিল নেপথ্যে। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার সোভিয়েত ইউনিয়নকে কথা দেয় যে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলে চট্টগ্রাম বন্দরে সোভিয়েত ইউনিয়ন পেতে পারবে নৌঘাঁটি গড়ার অধিকার; যদি সে সেটা চায়। চট্টগ্রাম বন্দর থাকবে সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে। সোভিয়েত নৌবাহিনীর জাহাজ ছিল দক্ষিণ ভারতের বিশাখাপত্তম বন্দরে। সোভিয়েত জাহাজ থেকে টর্পেডো ছুড়ে ডুবিয়ে দেয়া হয় পাকিস্তানের ডুবোজাহাজ গাজীকে। গাজী আসলে পাকিস্তানের জাহাজ ছিল না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটা পাকিস্তানকে ধার দিয়েছিল ১৯৬৪ সালে। নৌযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন অংশ নিয়েছিল। রুশ সেনাপতিরা ১৯৭১-এ ভারতকে রণকৌশল গঠনে দিয়েছিল বিশেষ সাহায্য-সহযোগিতা। পাকিস্তানের যুদ্ধ কেবল হয়ে থাকেনি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ। ১৯৭১-এর যুদ্ধ পরোক্ষভাবে হয়েছিল পাকিস্তান-সোভিয়েত যুদ্ধ। রণনীতিতে ভারতীয় সৈন্য উন্নত কৌশল প্রদর্শন করতে পেরেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আসা বিশেষজ্ঞদের কারণে। অর্থাৎ ১৯৭১-এর পাক- ভারত যুদ্ধ কেবল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধ ছিল না। এতে জড়িয়ে পড়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। ইন্দিরা গান্ধী চাননি যুদ্ধ একটা বৃহত্তর আন্তর্জাতিক রূপ পরিগ্রহ করুক। ভারত তাই যুদ্ধকে সংক্ষিপ্ত করে। আর চায় না পাকিস্তানকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে। সে খুশি হয় সাবেক পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করতে পেরেই। আজ যখন আমি ’৭১-এর যুদ্ধকে ফিরে দেখি, তখন এ রকমই মনে হয় আমার কাছে।
সিমলা চুক্তি নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা করেছেন ভারতের একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পিলু মোদি (Piloo Mody)। পিলু মোদি একটা বই লেখেন ১৯৭৩ সালে। বইটির নাম Zulfi my Friend|। পিলু মোদি ছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টোর বাল্যবন্ধু। তিনি তার বইয়ে জুলফিকার আলী ভুট্টো সম্পর্কে অনেক কিছু লিখেছেন। অনেক কিছু লিখেছেন সিমলা সম্মেলন সম্পর্কে। যা থেকে পাওয়া সম্ভব ইতিহাস লেখার বেশ কিছু উপকরণ। পিলু মোদি হিন্দু সমপ্রদায়ভুক্ত ব্যক্তি নন। তিনি হলেন ভারতীয় পারসি (Parsi) ধর্ম সমপ্রদায়ভুক্ত ব্যক্তি। ভারতে পারসি সমপ্রদায় জনসংখ্যার দিক খেকে খুবই নগণ্য। কিন্তু অর্থনীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে এরা হলেন খুবই প্রতিপত্তিশালী। ভারতের সবচেয়ে বড় শিল্পপতি ছিলেন জমসেদজী টাটা (তাতা)। যিনি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন টাটা কোম্পানি। ভারতের রাজনীতিতে পারসিরা রেখেছেন বিশেষ প্রভাব। ভারতের বিখ্যাত রাজনৈতিক দাদাভাই নৌরজি ছিলেন পারসি। নৌরজি প্রথম ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন। এটা ছিল সে সময় একটা বিরাট ঘটনা। মিনুমাসানি ছিলেন ভারতের একজন বিশিষ্ট সমাজতান্ত্রিক নেতা। তিনি তার লেখার মাধ্যমে ভারতীয় রাজনীতিতে রেখেছেন বিশেষ প্রভাব। ভারতের বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক হোমি জাহাঙ্গীর ভবা হলেন পারসি সমপ্রদায়ভুক্ত। মহাজাগতিক রশ্মি নিয়ে এর গবেষণা হয়ে আছে খুবই খ্যাত। ১৯৭১-এর যুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এস এইচ এফ জে মানেক শ (পরে মার্শাল) ছিলেন পারসিক সমাজভুক্ত। পিলু মোদি ছিলেন ভারতীয় পার্লামেন্টের সদস্য এবং ভারতীয় স্বতন্ত্র দলের একজন খুবই নামকরা নেতা। ১৯৭২ সালে যখন সিমলা সম্মেলন হচ্ছিল তখন তিনি যান সিমলায়। দেখা করেন ভুট্টোর সাথে। তিনি তাকে দেন বহুবিধ পরামর্শ। এ রকম করাটা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছিল তার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের কারণেই। ইন্দিরা গান্ধী তাকে বিরত রাখতে পারেননি ভুট্টোর সাথে দেখা ও উপদেশ প্রদান করা থেকে। অন্য কোনো ব্যক্তি হলে তাকে চিহ্নিত হতে হতো ভারতীয় আইনানুসারে দেশদ্রোহী হিসেবে। কিন্তু পিলু মোদিকে তা হতে হয়নি। পিলু মোদি তার বইয়ে বলেছেন- ইন্দিরা গান্ধী সিমলা সম্মেলনে ওঠান যুদ্ধবন্দীদের মধ্যে কিছুসংখ্যক ব্যক্তিকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করার প্রসঙ্গটি। জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, এতে তার আপত্তি নেই। কিন্তু বিচার হতে হবে জেনেভা কনভেনশন অনুসারে। জেনেভা কনভেনশন অনুসারে যুদ্ধবন্দী হত্যা হলো অন্যতম যুদ্ধাপরাধ। জেনেভা কনভেনশনানুসারে যুদ্ধবন্দীকে হত্যা করা যায় না। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানে ইপিআর তাদের হাতে ধরা পড়া পাক বাহিনী সৈন্যকে বন্দী অবস্থায় হত্যা করেছে। জেনেভা কনভেনশনানুসারে হতে হবে তাদের বিচার। পিলু মোদি তার বইয়ে বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা উঠতে পারত কাদেরিয়া বাহিনী সম্পর্কে। কাদেরিয়া বাহিনীর নেতা কাদের সিদ্দিকী অমানবিকভাবে নির্বিচারে বিহারি হত্যা করেছেন। সেটাও পড়তে পারে যুদ্ধাপরাধেরই মধ্যে। ইন্দিরা গান্ধী তাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে আর বেশি দূর অগ্রসর হতে চাননি। কারণ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গেলে দেখা দিত সমূহ জটিলতা। যুদ্ধাপরাধ ঘটেছে দুই পক্ষ থেকেই। এক পক্ষ থেকে নয়।
আন্তর্জাতিক নিয়মে করতে হতো যুদ্ধাপরাধের বিচার। আর আন্তর্জাতিক নিয়মে বিচার হলে, বিচারে পাকিস্তান পেতে পারত অধিক সুবিধা। এ কথা বলেছেন, পিলু মোদি তার লেখা Zulfi my Friend বইয়ে। পিলু মোদির মতে, জুলফিকার আলী ভুট্টো ও শেখ মুজিবের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল যথেষ্ট গভীর। জুলফিকার আলী ভুট্টো ছিলেন বিশেষভাবেই দ্বিজাতিতত্ত্বে বিশ্বাসী। জুলফিকার আলী ভুট্টো ছিলেন সিন্ধি। কিন্তু তিনি কখনোই তোলেননি সিন্ধি জাতীয়তাবাদের ধ্বনি। কিন্তু শেখ মুজিব চেয়েছেন পাকিস্তানের মধ্যে থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধ্বনি তুলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে। জনাব ভুট্টো মেনে নিতে পারেননি পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে। তিনি মনে করেন বাঙালি জাতীয়তাবাদ দেবে সাবেক পাকিস্তানকে দ্বিখণ্ডিত করে। পরবর্তী ঘটনা ভুট্টোর ধারণাকে, পিলু মোদির মতে, যথার্থ প্রমাণ করেছে।
সিমলা চুক্তি অনুসারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ আর ওঠা উচিত ছিল না। কিন্তু এখন নতুন করে উঠছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গ। এর একটি কারণ, বিশ্বরাজনীতির ধারা বিশেষভাবেই বদলে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক সময় তার পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করেছে কমিউনিজম রোধের লক্ষ্য সামনে রেখে। এখন তাকে পেয়ে বসেছে জঙ্গি ইসলাম আতঙ্কে। বর্তমানে বাংলাদেশে যাদের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করা হচ্ছে তাদের প্রায় সবাই সাধারণভাবে পরিচিত ইসলামপন্থী হিসেবে। ১৯৭১ সালে এরা সবাই ছিলেন অত্যন্ত তরুণ। এরা কতটা যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন সেটা তর্কের বিষয়। শেখ মুজিব চাননি এদের বিচার করতে।কিন্তু এখন এদের উঠতে হচ্ছে বিচারের কাঠগড়ায়। মনে হচ্ছে, সারা দেশে অনেক যুদ্ধাপরাধী আছে। আর তারা হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান সমস্যা। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। মনমোহন সিং বাংলাদেশে সফরে আসার ঠিক আগে দিয়ে বলেন যে, বাংলাদেশ ভরে উঠেছে মুসলিম মৌলবাদে। মুসলিম মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন করে বাংলাদেশের শতকরা ২৫ ভাগ মানুষ। পরে তিনি তার এই বক্তব্যকে প্রত্যাহার করে নেন। মনে হচ্ছে জামায়াতকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে বিশেষ করে উঠানো হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গটি। এ ক্ষেত্রে আছে ভারতেরও একটি ভূমিকা। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন লাভের আশায় উদ্যোগ নিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের। অথচ ১৯৭২-এর সিমলা চুক্তি অনুসারে এ রকম বিচার অনুষ্ঠান হওয়া উচিত ছিল না। সিমলা চুক্তির কোনো মূল্য এখন আর নেই।

লেখক : প্রবীণ শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট

সূত্রঃ https://i0.wp.com/www.dailynayadiganta.com/images/logo.gif

 

নীতিহীন সংবাদপত্রঃ দেশ জাতি রাষ্ট্রের স্বার্থ উপেক্ষিত যেখানে

মুহাম্মদ আমিনুল হক

‘সংবাদপত্র রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ’, ‘সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ’, ‘সংবাদপত্র গণতন্ত্রের অন্যতম হাতিয়ার’ এরকম অনেক কথাই দেশে দেশে প্রচলিত। এ কথাগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশ, জাতি, রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের কল্যাণে সংবাদপত্রের অনবদ্য ভূমিকার কারণে। সংবাদপত্রের কল্যাণে অনেক রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। স্বৈরতন্ত্র বিদায় করে পেয়েছে গণতন্ত্রের স্বাদ। জালিম সরকারের মসনদ প্রকম্পিত হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সমাজের প্রায় প্রত্যেকটি খাতের উন্নয়নে অবদান রেখেছে এই সংবাদপত্র।

কিন্তু সময়ের আবর্তে সংবাদপত্রের ঐসব সোনালী ইতিহাস মুছে যেতে বসেছে এক শ্রেণীর নীতি বিবর্জিত, স্বার্থান্বেষী, নষ্ট সংবাদপত্রের কারণে। যাদের কাছে নীতি নৈতিকতার কোন মূল্য নেই। নেই দেশীয় স্বার্থের কোন মূল্য। ব্যক্তি, দল ও কোম্পানীর গোলামী করাই এদের মূল কাজে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ পত্র-পত্রিকা পড়ে কোন মানুষের পক্ষে সত্য তথ্য উদঘাটন করা প্রায় অসম্ভব। বিশ্বব্যাপী তথ্য সন্ত্রাসের ঢেউ বাংলাদেশী মিডিয়ায়ও লেগেছে দারুণভাবে। এখানে নিউজ হয় সিন্ডিকেটেড। নিজস্ব মতাদর্শের বাইরে অন্য মতাদর্শের পজিটিভ কোন নিউজ সেটা যত বড় হোক না কেন সাংবাদিকদের চোখে তা তো পড়েই না বরং তাদেরকে দেশ-জাতির কাছে ছোট করার সর্ব রকম প্রচেষ্টা থাকে প্রতিনিয়ত। তবে এরা নিজ মতাদর্শের ব্যাপারে একশত ভাগ কমিটেড। তাদের পন্থী একটি ইঁদুরেরও কিছু হলে তা নিয়ে তাদের মাতামাতির শেষ থাকে না। একটি নন ইস্যুকে ইস্যু বানানো আবার ইস্যুকে নন ইস্যু বানানো তাদের পক্ষে কোন ব্যাপারই না।

সংবাদপত্রের এই নীতিহীন পথচলার কারণে আমাদের জাতীয় স্বার্থ আজ হুমকির মূখে, সাম্রাজ্যবাদ আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে, গণতন্ত্র বিদায়ের পথে ও অপশক্তিরা সবখানে তাদের আসন পাকাপোক্ত করছে। শুধু কি তাই? সংবাদপত্রের চরম আদর্শহীনতার কারণে খোদ সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বার্থ পর্যন্ত থাকছে উপেক্ষিত। সংবাদপত্র জগতের এমন দেউলিয়াত্ব দেখে দেশপ্রেমিক হিসেবে চরমভাবে লজ্জিত ও শঙ্কিত হই। কেননা যেখানে সংবাদপত্রের এমন দূর্দশা হয়; যেখানে কেউ সত্য জানতে পারে না, সেখানে মানবতা ও গণতন্ত্রের নিশ্চিত মৃত্যু ঘটে। নিম্নের কয়েকটি বিষয়ে আমাদের সংবাদপত্রগুলোর অবস্থান বিশ্লেষণ করলে যে কোন বিবেকবান পুরুষ হতভম্ভ হবেন।

১৬ ই জুন সংবাদপত্রের কালো দিবসঃ

জানার কোন সাধ্য নেই: ১৬ ই জুন ফজরের নামাজ আদায় করেই প্রত্যেকদিনের মত ইন্টারনেটে পত্রিকা ঘাটতে শুরু করলাম। এই দিনটি সংবাদপত্র জগতের বিশেষ দিন হওয়াতে কোন পত্রিকা কিভাবে নিউজ করে সেটা দেখার মানসে খুব মনেযোগ সহকারে ইত্তেফাক, ইনকিলাব, প্রথম আলো, সমকাল, যুগান্তর, কালের কন্ঠ, সকালের খবর, সংগ্রাম, আমার দেশ ও নয়া দিগন্তসহ প্রায় সব জাতীয় পত্রিকা ঘাটাঘাটি করতে থাকলাম। সংবাদপত্রের কালো দিবসের সংবাদ তালাশ করতে গিয়ে অধিকাংশ পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন নিউজ দেখতে পেলাম না। এতে খুব একটা বিরক্ত ও রাগান্বিত হইনি। কারণ দুটি। এক: পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমি আগ থেকেই ধরে নিয়েছিলাম যে, গণতন্ত্রের ফেরীওয়ালারা ও বর্তমান সরকারের চরম গোলামেরা এ সম্পর্কে মনের ভুলেও কোন খবর ছাপাবে না। দুই: তবে এতটুকু আত্মবিশ্বাস ছিল যে, অন্তত দু একটি পত্রিকা এ সম্পর্কে জাতিকে খবর না দিয়ে পারবে না; যারা দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশী মূল্য দেয়। আমার অনুমান মিথ্যা হয়নি। ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে একমাত্র আমার দেশ পত্রিকা বিশেষ সংখ্যা বের করে এ সম্পর্কে আদ্যোপান্ত তথ্য জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। প্রথম পাতায় গুরুত্ব সহকারে খবর ছাপা হয়েছে। সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়তেও বিষদভাবে লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। নয়া দিগন্ত কোন বিশেষ আয়োজন না করলেও কালো দিবসের খবর, সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়তে বিষয়টি তুলে ধরেছে।

https://i0.wp.com/www.amardeshonline.com/img/amardesh.png

https://i0.wp.com/www.dailynayadiganta.com/images/logo.gif

তবে বিস্মিত হয়েছি চটকদার চটকদার শ্লোগানওয়ালা প্রগতিশীল পত্রিকাগুলোর নির্লজ্জ নিশ্চুপতা দেখে। ১৯৭৫ সনের ১৬ ই জুন মাত্র চারটি পত্রিকা সরকারের বগলের তলায় রেখে বাকী সংবাদপত্রগুলোকে মুহূর্তেই কবর দেয়া হল; অসংখ্য সাংবাদিকের জীবনে নেমে আসল চরম অনিশ্চয়তা; গণতন্ত্রের প্রধান হাতিয়ারকে ধ্বংস করা হল অথচ এ সম্পর্কে নব প্রজন্মকে এতটুকু জানানোর কোন দায়বোধ তাদের মধ্যে জাগ্রত হল না। দল ও স্বার্থের কাছে যারা বিবেক বিক্রি করে তারা কিভাবে এ খবর জাতিকে জানাবে? এ তো লজ্জার খবর। এই খবর জানালে তো আওয়ামী লীগের বদনামী হয়ে যায়। এ কি করে সম্ভব? সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেয়েছি ইত্তেফাকের অবস্থা দেখে। তৎকালীন সময়ে ইত্তেফাক পত্রিকার ওপর থেকেও কম ঝড় যায়নি; অথচ পত্রিকাটি এখন একদম চুপ। নিজ মতাদর্শের গোলামী এখন এমন পর্যায় পৌছে গেছে যে, পত্রিকার সাংবাদিকদের উপর আঘাত আসলেও তা নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করতে রাজি নয় সংশ্লিষ্ট পত্রিকাটি।

https://i0.wp.com/new.ittefaq.com.bd/addons/themes/ittefaq/img/logo.jpg

স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। পত্র-পত্রিকা হচ্ছে স্বাধীন মত প্রকাশের প্রধান মাধ্যম। সেই প্রধান মাধ্যমটির অস্তিত্ব বিলীন হলে তো গণতন্ত্র কল্পনা করা যাবে না। রক্ষা হবে না দেশীয় স্বার্থ। অতীব দু:খের বিষয় হচ্ছে- আমাদের সংবাদপত্রগুলো তাদের নিজ স্বার্থ রক্ষা করতে চান না। তারা জাতিকে অতীতের কঠিন ইতিহাস মনে করিয়ে বর্তমানেও যাতে এমন বিপদে পড়তে না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করতে চান না। তাদের এই হীন মানসিকতার কারণেই চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করতে পেরেছে সরকার। যমুনা টেলিভিশনের পরীক্ষামূলক সম্প্রচারও বন্ধ হয়েছে। দৈনিক আমার দেশকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছে। অসংখ্য সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

ভারতকে ভূমি হস্তান্তরের খবরঃ

পত্রিকায় খবর নেই: আমাদের বাংলাদেশে দেশ প্রেমিকের অভাব নেই। মিছিল মিটিং ও শ্লোগানে দেশ নিয়ে কত কথা। ‘এক ফোটা রক্ত থাকতে দেশের এক ইঞ্চি মাটিও অন্যকে দখল করতে দেব না’, ‘দেশের জন্য জীবন দেব‘, ‘দেশকে মায়ের মত ভালবাসি’ ইত্যাদি বাক্য শুনতে শুনতে তো আম জনতার কান ব্যথা হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা উল্টা। দেশ নিয়ে ভাবেন এ রকম মানুষ খুবই কম। গত ২১ জুন দৈনিক আমার দেশনয়া দিগন্ত পত্রিকার প্রথম পাতায় যথাক্রমে “সিলেট সীমান্তে জনতার প্রতিরোধে এবার রক্ষা পেল ৫০ একর জমি” “জনতার প্রতিরোধ :

গোয়াইনঘাটে বাংলাদেশের ভূমি আবার ভারতের হাতে তুলে দেয়ার প্রক্রিয়া ভন্ডুল”। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জনগণকে না জানিয়ে গোপনে ভারতকে বাংলাদেশের জমি হস্তান্তরের খবর যেকোন বিচারে লিড নিউজ পাওয়ার দাবী রাখে। দেশের প্রতিটি ইঞ্চি জমি রক্ষার দায়িত্ব নিশ্চয়ই সরকারের। তাদের রয়েছে সেনা বাহিনী, রয়েছে বর্ডার গার্ড। সরকারের দায়িত্ব হীনতায় কিংবা তাদের মদদে যখন দেশের মাটি ভারত কেড়ে নিচ্ছেলো তখন দেশ প্রেমিক জনতার প্রতিরোধে তা ভন্ডুল হয়ে যায়। এ সময় উচিত ছিল আমাদের জাতীয় মাধ্যমগুলোতে এ সম্পর্কে লিড নিউজ করা। তাহলেই বোঝা যেত সংবাদপত্রগুলো দেশকে ভালবাসে, দেশ রক্ষায় তাদের কত আন্তরিকতা। কিন্তু বিস্ময়করভাবে প্রায় সকল জাতীয় পত্রিকায় এ সম্পর্কে কোন নিউজ দেয়া হয়নি। অথচ ঐ দিন ভারতীয় সেনা প্রধানের নিউজ সকল পত্রিকার প্রথম কিংবা শেষের পাতায় ছাপা হয়েছে। অর্থাৎ ভারতীয় সেনা প্রধানের খবর আমাদের জাতীয় স্বার্থের খবরের চেয়ে বড় হয়ে দাড়িয়েছে। যারা দেশ রক্ষার প্রহরী হিসেবে পরিচিত; সেই সংবাদপত্র যদি সরকারের দেশ বিরোধী গোপন তৎপরতা সম্পর্কে জনগনকে সজাগ করতে না পারেন তাহলে এরচেয়ে দূর্ভাগ্য আর কী হতে পারে?

https://i0.wp.com/www.bdinn.com/wp-content/uploads/2011/06/bangladeser-songay-bharo.jpg

https://i0.wp.com/29.media.tumblr.com/tumblr_ljrggiRgA61qelvyvo1_500.jpg

জাতীয় চেতনার প্রতীক নজরুল উপেক্ষিত আমাদের সংবাদপত্রে: কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি। কালজয়ী ক্ষণজন্মা এ মহাপুরুষ যেমনিভাবে তাঁর সাহিত্য দিয়ে আমাদের ধন্য করেছেন; তেমনিভাবে ধন্য করেছেন তাঁর দেশপ্রেম, সততা, মানবতাবোধ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী চেতনা দিয়ে। তাঁর লেখনীতে দেশের কথা, গরিবের কথা, জালিমের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা, মানুষের মনে সাহস যোগানোর কথা ও সাম্যের কথা ফুটে উঠেছে সাবলীলভাবে। কিন্তু আমাদের জাতীয় এ সম্পদ উপেক্ষিত এদেশের মিডিয়া জগতে। নজরুলকে নিয়ে ততটা মাতামাতি নেই যতটা আছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে। আমাদের দেশে এ বছর রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যত মাতামাতি হয়েছে তার সিকিভাগও হয়নি তার নিজভূমে। রবীন্দ্রনাথের জন্মসার্ধশত বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় লিড নিউজের শিরোনাম ছিল ‘রবীন্দ্রময় দেশ’। নি:সন্দেহে কবি রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা কবি কিন্তু তাঁকে নিয়ে যে স্তুতি গাওয়া হয় তা কি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পড়ে না? বিশেষ করে জাতীয় কবিকে উপেক্ষা করে যখন এটা করা হয় তখন তো তা বেশ বেমানান লাগে বৈ কি? আমাদের গুণীজনকে আমরা যদি মূল্যায়ন না করতে পারি তাহলে অন্যরা করবে কিভাবে? কিন্তু আমাদের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম বিষয়টি ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক এড়িয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা দেশত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে। পত্রিকাটি এ বছরের মে মাসের শেষ ১৫ দিন প্রথম পাতায় বাম পাশে এক কলাম জুড়ে ‘চির উন্নত মমশীর’ নামে ধারাবাহিকভাবে নজরুলের উপর বিজ্ঞজনদের লেখা ছাপিয়েছে। দৈনিক আমার দেশের সাহিত্য সাময়িকীতেও গুরুত্বের সাথে নজরুলকে তুলে ধরা হয়েছে। নজরুলকে তুলে ধরতে গিয়ে পত্রিকাটি রবীন্দ্রনাথকেও ভুলে যায়নি। যথাযথ মর্যাদায় তাঁর সম্পর্কে নিউজ কভার করেছে পত্রিকাটি।

দুটি বর্বরতাঃ

একটির খবর আসে আরেকটির খবর আসে না: দুটি জঘন্যতম বর্বরতার ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে। একটি হল- ২০০৪ সনের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনা। আরেকটি হল- ২০০৬ সনের ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি বৈঠা দিয়ে প্রকাশ্যে জীবন্তমানুষ হত্যা করার ঘটনা। ২৮ অক্টোবরের ঘটনার সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত বিধায় বাস্তব কারণেই বর্তমান সরকার এ বিষয়ে কোন বিচার-আচার করবে না, এটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে, যেখানে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই সেখানে ঐ ঘটনার ন্যায় বিচার কল্পনা করা যায় না। কিন্তু পত্রিকাগুলো তো আর সরকার নয় কিংবা কোন পক্ষের নয়। তাদের কাজ সমাজের সকল ন্যায় অন্যায় মানুষের সামনে তুলে ধরা। মানবতার খাতিরে বিরোধী কেউ হলেও তাকে এড়িয়ে না চলা। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের জাতীয় পত্রিকাগুলো ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম ঘটনাকে সম্পূর্ন এড়িয়ে যাচ্ছে। অথচ তারও দু’বছর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের আরেক বর্বরতাকে নিয়ে পত্রিকাগুলোর বিস্তর লেখালেখি চলছে এখনো। এক গবেষণায় দেখা গেছে ২০১০ সনের ২৮ অক্টোবর দৈনিক আমার দেশ, নয়া দিগন্ত ও সংগ্রাম ছাড়া আর কোন জাতীয় পত্রিকা পল্টনের বর্বরতার কোন নিউজ করার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। অথচ আওয়ামী সরকারের ঘোর সমালোচক পত্রিকাসহ সকল পত্রিকা ২০০৪ সনের ২১ আগস্টের খবর গুরুত্বের সাথে ছাপিয়েছে। কোন কোন পত্রিকা একাধিক লিড নিউজ, কভার স্টোরি ও ফলোআপ রিপোর্ট করেছে। সংবাদপত্র নাকি সমাজের দর্পণ? সমাজের সকল সত্য ঘটনা তুলে ধরা নাকি সংবাদ পত্রের কাজ? তাহলে একটি ঘটনাকে হাই লাইট অন্য ঘটনাকে ডিম লাইট করার উদ্দেশ্য কী? মানবতাও কি বর্ণ, গোত্র ও দলের কাছে বন্দি হয়ে গেল? তাই যদি হয় তাহলে ‘অসংকোচ প্রকাশের দূরন্ত সাহস’, ‘আংশিক নয় পুরো সত্য’, ‘পনের কোটি মানুষের জন্য প্রতিদিন’ ‘Your right to know’ ইত্যাদি মিথ্যা শ্লোগানের আশ্রয় নেয়ার দরকার কি? জাতির সাথে এ ধরনের প্রতারণা আর কতদিন চলবে?

আমাদের জাতীয় পত্রিকাগুলোর নৈতিকতা নিয়ে এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে। সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র লীগ যে অস্ত্রবাজি, মারামারি, হত্যা ও লুট করছে তা ঐসব প্রগতীশীল পত্রিকার নজরে সন্ত্রাসী কিংবা জংগিবাদী কার্যক্রম হিসেবে পরিগণিত হয় না; কিন্তু ইসলামী সংগঠনগুলোর নিছক মিছিল মিটিংকে ঠিকই তারা সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গী কার্যক্রম হিসেবে পরিচিত করতে কুন্ঠাবোধ করে না। কয়েকদিন পর পর ঢাবি, চবি, জাবি, ইবি ও রাবিতে ছাত্রলীগের নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। সর্বশেষ রাবির এক হল থেকে ছাত্রলীগ কর্মীদের রুম তল্লাশি করে ব্যাপক অস্ত্র উদ্ধার হলেও এ নিয়ে মিডিয়ার চোখ প্রায় অন্ধ। গদ বাধা ও দায়সারা কিছু সংবাদ প্রকাশ করেই ক্ষ্যন্ত। অথচ এই একই মিডিয়া রাজশাহীতে ফারুক হত্যাকান্ডের পর একের পর এক আজগুবি ও মিথ্যা রিপোর্ট করে সরকারের মাথা খারাপ করে ফেলেছিল। সারাদেশে শুরু হয়েছিল শিবির নিধন কর্মসূচী। দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানই কেবল ঝুঁকি নিয়ে মানবতার পক্ষে কলম ধরেছিলেন। তিনি ‘ওরা মানুষ নয় শিবির’ নামে একটি মন্তব্য প্রতিবেদন লিখে সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।

সংবাদপত্রের এই দেউলিয়াত্ব দেখে আমরা দেশ প্রেমিক জনতা খুবই শঙ্কিত। কেননা যেখানে সরকারের কোন নীতি নৈতিকতা নেই, বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, প্রশাসনের বেহাল দশা সেখানে যদি সংবাদপত্রও বিলীন হয়ে যায় তাহলে আমাদের সাগরের অতল গহবরে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। সংবাদপত্র যদি সাম্রাজ্যবাদ, ফ্যাসিবাদ আর অগণতান্ত্রিক শক্তির সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে তাহলে এদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক মুক্তি, ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার কখনো প্রতিষ্ঠিত হবে না এ কথা হলফ করে বলা যায়। আমরা তাই সকল সংবাদপত্রকে অনুরোধ করছি- আপনারা দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের কল্যাণে নিউজ করুন। সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগনের পাশে দাঁড়ান। দলীয় গোড়ামীর উর্ধ্বে উঠে সকলের জন্য কাজ করুন। কোন অপশক্তি আপনাদের ক্ষতি পারবে না।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম।

http://www.sonarbangladesh.com/articles/MuhammadAminulHaque
 

সূত্রঃ

https://i0.wp.com/www.sonarbangladesh.com/images/sbheader_village_sun.jpg

 

তিনি সুফি নামধারী ভন্ডঃ ইসলামী সিপাহসালার সুফী মিজানের কান্ড-কীর্তি


নাসিরাবাদের বাসায় ভারতের শিল্পী মিতালী মুখার্জির সাথে হাস্যজ্জল ইসলামী সিপাহসালার সুফী মিজান।(হাতে তসবি)

বিশিষ্ট শিল্পপতি সুফী মিজান। সবাই কম বেশী চিনে। ছিল পূবালী ব্যাংকের ক্লার্ক। চাপাবাজি আর ধান্দাবাজির মাধ্যমে এখন সমাজের বিরাট ব্যবসায়ী। ইসলামের নামে দেশে যে কজন ভণ্ডামি আর ব্যবসা করে তার মধ্য এই লোক অন্যতম। দেশে ব্যবসায়িত অনেক আছে কিন্তু এ লোক অত্যন্ত ধুরন্ধর। এটিএনের মাহফুজকে ম্যানেজ করে ইসলামী পোগ্রামের নামে নিজের পরিচিতি বাড়ানোর কাজ করে। এরপর চট্টগ্রামে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিনের সাথে চলাফেরার সুত্র ধরে বগলদাবা করেন জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ। টাকার বিনিময়ে প্রতি শুক্রবার তিনি সেখানে গজল গেয়ে শুনান। হাতে সবসময় একটা তসবিহ রাখেন এই ভন্ড। সে তাসবিহ নিয়ে নর্তকীদের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সব জায়গায় জান। ক্যাটরিনার উরু আর কোমরের দোলন এবং ক্যাটরিনার রসালো নিতম্ব দেখার সুযোগ করে দিতে তার আগ্রহে তার প্রতিষ্টান PHP ৫ কোটি টাকার গোল্ড স্পন্সর করে Tri-Nation Big Show নামে ঢাকা স্টেডিয়ামে হয়ে যাওয়া অনুষ্ঠানে।

ক্যাটরিনার রসালো নিতম্ব দেখতে ৫ কোটি টাকার গোল্ড স্পন্সর PHP

মুখে আর চলাফেরায় ধার্মিক লোকটা আবার দেশের কাদিয়ানীদের পৃষ্টপোশকও বটে। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্ঠা গওহর রিজভিকে তখন কেউ ছিনতোনা যখন এই লোক কাদিয়ানী রিজভিকে নিজের প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় ইউআইটিএস এ উপদেষ্ঠা হিসেবে নিয়োগ দেয়। আর সুফি মিজানের সাথে এই কাদিয়ানী রিজভিকে পরিচয় করিয়ে দেয় ভারতের এক প্রভাবশালী কাদিয়ানী নেতা। ভারতের সেই প্রভাবশালী কাদিয়ানী নেতা গত ২০০৯ এ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেসের (ইউআইটিএস) প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে একই বিমানে ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে কালাম, গওহর রিজভীর সাথে বাংলাদেশে আসেন।

সবুজ টুপি পরিহিত ভারতের কাদিয়ানী নেতাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন সুফি মিজান

এতসব লেখলাম কারন সম্প্রতি চট্টগ্রাম এইচএসবিসির একটি পোগ্রামে সুফির কান্ড জানাতে। অনুষ্ঠানটি হয়েছিল নগরীর অভিজাত রেস্টুরেন্ট অ্যাম্ব্রোশিয়ায়। আর আমন্ত্রিত অতিথির সংখ্যা ছিল মাত্র ১২০ জন। অনুষ্ঠানে গান শুনাতে ভারত থেকে আনা হয় শ্রীকান্ত, ভূপিন্দর সিংহ ও মিতালী মুখার্জিকে। তাজ্জব বনে গেলাম সেখানে সুফি মিজানের কান্ড জেনে। আমার এক বন্ধু এইচএসবিসি চট্টগ্রামের উচ্চপদে কর্মরত। সে যা বলল সুফি মিজান নিয়ে। ছিঃ। আগের দিনে যেভাবে যাত্রা বা নৃত্য অনুষ্ঠানে নর্তকী বা শিল্পীদের গান পছন্দ হলে মানুষ স্টেজে উঠে তাকে আলিঙ্গন করে উপহার দিত ঠিক সেভাবেই সুফি মিজান সেখানে মঞ্চ উঠে মিতালী মুখার্জিকে জড়িয়ে ধরে মা বলে সম্বোধন করে। এমনকি তাকে রাতের বিমানের টিকেট ক্যান্সেল করিয়ে নিয়ে যান তার বাড়িতে। সেখানে তার জন্য করা হয় আলোকসজ্জা সহ রাজকীয় আয়োজন। রাতে মিতালীকে নিয়ে গানের আসর বসান নিজ বাড়িতে।

মিতালীকে নিয়ে মিজান

ইসলামের নামে ভন্ডামী করার কারনে আমার এই ক্ষোভ। ইসলাম এবং মিতালী-ক্যাটরিনা একসাথে চলতে পারেনা। সবাই সাবধান এই লোক থেকে কারন এর মারাত্নক কনভিন্সিং ক্ষমতা আছে। সাংবাদিক তার পকেটে। টাকা দিয়ে এমন এমন রিপোর্ট করায় পত্রিকায় যে কেউ এ লোকের প্রেমে পড়তে বাধ্য। বক্তব্য এমন ভাবে দেন যেন তিনি ফেরেশ্তা। আমি যদি মিথ্যা কোন তথ্য দিই তাহলে আপনারা নিজেরাই যাচাই করুণ। জরুরী অবস্থায়(১/১১) এ লোক আমার সামনেই এক সেনা কমান্ডারকে কনভিন্স করতে গিয়ে কি অপমানিত হয়েছিলেন তা আরেকদিন বলবো। এসব ভন্ড এবং ইসলামের নামে ব্যবসাকারী থেকে নিজে সাবধান থাকুন এবং কেউ এ ধরনের ভন্ড সম্পর্কে জানলে তথ্য দিন।

সুফির সরকারী পৃষ্ঠপোষক কাদিয়ানী গওহর রিজবী

৭ ছেলে ১ মেয়ে তার, ৬ জনকে দেখা যাচ্ছে (ফটো তোলার আগে তিনি হাতে তসবী নেন)

মূলসূত্র– স্মার্ট গাই

সূত্রঃ

https://i0.wp.com/www.sonarbangladesh.com/blog/images/sbblogheader_autumn.jpg

 

 

 

 

 

Bangladesh ‘Feared Attack’ From Burma: WikiLeaks

By JOSEPH ALLCHIN
https://i0.wp.com/www.shwe.org/wp-content/uploads/2011/03/Maritime-dispute-between-Bangladesh-and-Myanmar.jpg

Bangladeshi officials have said they expect a result in the arbitration over maritime boundaries in the Bay of Bengal by April, as a leaked US cable reveals that Dhaka was seeking US assistance after a Burmese military build-up stemming from the dispute.

“The arguments [over boundaries] will be held in two phases ending on 24 Sept and the ruling is expected in April,” Bangladeshi Foreign Minister Mijarul Quayes told Reuters on Sunday.

The initial complaint was submitted to the UN International Tribunal for the Law of the Sea (ITLOS) in 2009, but the hearings did not commence till 5 September this year.

The dispute concerns a semi-submersible drilling platform owned by Swiss-US oil firm Transocean Inc, but was leased to South Korea’s Daewoo. Daewoo, along with their partner, Kogas, were given permission to explore for oil and gas in the disputed AD-7 offshore block by the Burmese authorities in 2008. The rig was escorted into the contested waters by the Burmese navy.

https://i0.wp.com/news.bbc.co.uk/media/images/45977000/jpg/_45977439_4bf8da0e-4fef-41c7-bef3-b09b652619c3.jpg

Several senior Burmese military officials are reported to have been arrested over the leaking of this photograph - appearing to show tunnels built in Burma with the help of North Korean experts for military purpose.

At the time news surfaced of a military build up on the shared land border but a recent cable released by Wikileaks indicates that the Bangladeshi government asked the US for help.

https://i0.wp.com/h4.abload.de/img/img.167836_tpxm.jpg

Bangladesh Army

https://wakeupbd.files.wordpress.com/2011/09/myanmararmy.jpg?w=300

Burmese Military

“Army Chief General Moeen Uddin Ahmed asked the Ambassador [US] for assistance to assess the buildup, specifically requesting satellite imagery to assist the Bangladesh Army see the scope of the Burmese military presence and track further developments,” the cable, dated 18 December 2008, notes.

As a result of pressure at the time, the Daewoo rig, which was believed to have cost some $US400,000 per day, was moved out of the contested area. According to the cable’s source, “[Foreign Affairs advisor] Chowdhury claimed Daewoo had removed its rig in November solely because of pressure from the Korean Government.”

The cable further notes that the military build up was because “the Burmese Government was seeking revenge against Bangladesh for the offshore rig incident.”

https://i0.wp.com/www.bdnews24.com/nimage/125.jpg.jpg

The then Bangladesh Army Chief Gen. Moeen U Ahmed during his visit to Burma

The Bangladesh Army chief noted that the Burmese forces, who were believed to be 30 kilometres away from the border, “lived off the land”, and “reports from arriving refugees had underscored the increasing desperation of the under-funded Burmese soldiers”. It continued that the refugees’ “tales of treatment at the hands of Burmese soldiers reflected an increasingly frustrated Military.”

Bangladesh is desperate to secure energy supplies, and the nation’s state-owned oil company, Petrobangla, has signed deals with US oil company Conocco Philips to explore in its waters.

Source :

https://i0.wp.com/images.dvb.no/wp-content/themes/1044-thebeeb/images/masthead-v2.jpg

Indian Chief of Army Enters in Bangladesh

By: Abu Zafar Mahmood, USA

Yes! The news finally comes true. The Indian Army Chief General Vijay Kumar Singh is entering in Bangladesh on Sunday June 19 and he will oversee their military interests. The cadets will salute his command in passing out parade at Fauzdarhat Military Academy, Chittagong.

https://i0.wp.com/topnews.in/law/files/gen-vijay-kumar-singh.jpgIndian Army Chief General Vijay Kumar Singh

Though from the government side it is told that the Indian COAS will be honored by Bangladesh Army as the Indian Army contributed in our liberation war in 1971 and VK Sing is the only alive officer of those contributors. We, the liberation warriors should take it easy and continue the same friendlier feeling as was in the battle field. But it`s hard for me to forget the betrayal that I witnessed their open conspiracy against Bangladesh Armed forces and Mukti bahinee where they ignited the liberation warriors in so many ways in a goal of establishing absolute Indian control on war as the stage of invading Bangladesh. The world experienced Bangladesh victory with ending session of the liberation war and the Indian`s friendlier magic on 16 December 1971.

Passing out parade, Bangladesh Military Academy, Bhatiary

However, here is no reason to believe it is a friendlier visit only and Bangladesh army is saluting his command in Bangladesh sacrificing their highest patriotic morality. It is a strategic move of Indian chief whatever secretly arranged earlier by the heads of both governments. Bangladeshi Prime Minister acts seller in this perspective as she lost the moral courage to discuss open on her deals with India and involve the opposition parties in the parliament to support her. She don`t do it and never care to do that.

I boldly criticize and oppose such cowardness and selling the dignity of Independence of beloved Bangladesh in exchange of a person/group`s private interests. It is unbelievable that Bangladesh army initiate indesigning this suicidal military strategy that push them under Indian dictation. We will not accept the Prime Minister ignores the Military dignity of Bangladesh and will provide the appropriate answer of this political trade of selling the armed-force and the Independence of Bangladesh.

On Monday May 16 The Chief of Army Staff General M Abdul Mubeen apprised President Zillur Rahman of this by paying him a call on at Bangabhaban, reports BSS. http://www.newstoday.com.bd/index.php?option=details&news_id=27739&date=2011-05-17

Huge criticisms are spreading in inside and abroad on this surrender to India. Though in the early reports the Indian biased Medias hided V K Sing`s receiving salute in passing out parade. That happened with the signal of “New MujibBahinee” from inside the Government administration.

“ Mujib Bahinee” is reorganized with new design. Government has positioned 4, 84,960 (Four Lac Eighty four thousands and nine hundred sixty) Fanatic Hindu since the new political leadership empowered in the government in January 2009. The other members are pro-Indian Muslims and other anti-Nationalists and anti-Muslims. Their goal is to squeeze the Muslim majority in Bangladesh as Indian leadership is serious allergic to Bangladeshi Muslims. So, their intelligence RAW has been buying the opportunists to weaken the strength of the nationalists.

https://i0.wp.com/www.vsocio.com/wp-content/uploads/2011/05/RAW-India-Intelligence.jpg

India's nasty intelligence wing RAW Logo

The Indian Army and RAW maintain Military strategic policy for Bangladesh as it continues for Pakistan and Afghanistan. Afghanistan is their base of training the terrorists and military expansion. Pakistan is Indian target to keep growing turmoil and massacre through Talibans and others. Bangladesh to run as annexed Indian state as it is located in strategic geographical location to connect South East and South Asia at the same time to get control over sea-route of the Strait of Malacca, carrying about one-quarter of the world’s traded goods including oil, Chinese manufactures, and Indonesian coffee. It is a Major Oil transportation route of China.

Indian Army Chief General V K Singh will land in Bangladesh on June 19. He will receive salute in the passing out parade of the military cadets in Chittagong Fauzdar Hat Cadet College. This will be the record on Bangladesh History that Bangladeshi military officers salute the Indian Military Chief in passing out parade. He will be honored as Bangladesh Army Chief or Commander in chief of Armed forces in this perspective. The frustrations of the liberation warriors and other patriots are mounting.

https://i0.wp.com/upload.wikimedia.org/wikipedia/en/thumb/b/be/BD_tri-service_badge.png/200px-BD_tri-service_badge.png

Tri-service badge of Bangladesh Armed Forces

Bangladesh Armed-forces that was founded during the liberation war of Bangladesh under the command of M. A. G Osmanee, did not even salute the Indian Chief in the passing out parades though the Indian army was the allied force in the war.

The angers have been spreading among the patriot citizens and that turns hot as fry-pan against the Hasina government. People treat them traitors and the melted matters from volcanoes have started flowing.

https://i0.wp.com/static.priyo.com/files/image/2011/03/16/20110316-hasinamonmohan-460.jpg

The Indian backing for forming Hasina government in January 2009 and the “alternative war” on military officers in BDR Headquarter Philkhana in February, next month. Also the elimination of BDR clearly confirms Indian benefits. “Alternative war” is a war that appears in different faces or disguises manner but damage and eliminate in same form of war.

Now it is more clear to the political quarters that India has created their multiple pockets in Bangladesh to continue the implementation of their goals. As the naked Indian collaborating of the Hasina government appears as the act against the existence of Bangladesh and that results annexation with India, BNP with her alliance has taken the strong Nationalist stand to push down the government.

Fortunately Vijay Kumar will be received and saluted by some coward sector commanders of Mukti Bahinee also and he love to see them who were loyal to Indian Army earlier without any hassle and attended happily in the betrayal session of the history of war. They stepped in turning the Victory event of Bangladesh into Indian victory over Pakistan with the strategy to annex Bangladesh in time.

(Abu Zafar Mahmood, Washington DC.

E-mail: rivercrossinternational@yahoo.com & azmnyc@gmail.com)

Source :

পার্বত্য চট্রগ্রামকে পুর্ব-তিমুর/দক্ষিণ সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন করে আরেকটি ইসরাইল বানানো হবে ?

দেশের এক-দশমাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কি পুর্ব-তিমুর, দক্ষিন সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন করা হবে নাকি আরেকটি ইসরাইল বানানো হবে

ছবিঃ দেশের এক-দশমাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কি পুর্ব-তিমুর, দক্ষিন সুদানের মতো বিচ্ছিন্ন করা হবে নাকি আরেকটি ইসরাইল বানানো হবে

আমাদের ক্লাসের সুদানী মেধাবী মেয়ে রাগাত। বাবা-মায়ের সাথে সৌদিতে পড়ালেখা করলেও এখন মাষ্টার্স ছাত্র হিসেবে পড়াশুনা করে সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ইউনিভার্সিটিতে। গত মধ্য ফ্রেব্রয়ারীতে তিউনেশিয়া, মিশর বিপ্লবের তাজা ও উদ্দিপনামুলক খবরের মাঝেও তার মন বেশ খারাপ। কারন জিজ্ঞেস করলেই বললো, বিশাল সুদানকে ভেজ্ঞে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে। শুধু মাত্র খৃষ্টান অধ্যুষিত হওয়ার কারনেই দক্ষিণ সুদানকে পশ্চিমা শক্তি আলাদা করে এককালের আফ্রিকার বৃহত দেশ (আয়তনে) সুদান ভেজ্ঞে দুর্বল করে ফেললো। রাগাত আরো জানালো, দক্ষিণ সুদানে অনেক খনিজ সম্পদ আছে যা নিয়ন্ত্রন করার জন্য দেশটিকে বহুবছর থেকে পশ্চি্মা খৃষ্টানরা নানা প্রচেষ্টার মাধ্যমে ধর্মান্তরিকরনের কাজটি করেছে। দক্ষিণ সুদানকে বিশ্বমোড়ল একদিন স্বাধীন করেই দিবে এটা এতোদিন আমরা বিশ্বাস করতে ও বুঝতে না পারলেও এখন বুঝি।যখন বুঝি, তখন কিছুই করার নেই। এরা আসলেই আমাদের টুকুরো টুকরো করার জন্য এতোদিন ধরে কাজ করেছিল।


সদ্য বিচ্ছিন্ন করে ফেলা খৃষ্টান অধ্যষিত দক্ষিণ সুদান

ছবিঃ সদ্য বিচ্ছিন্ন করে ফেলা খৃষ্টান অধ্যষিত দক্ষিণ সুদান

বাসার ফিরতে ফিরতে রাগাতের কথাই ভাবছিলাম। মনে হলো, তার কাছে থেকে দক্ষিণ সুদান সম্পর্কে আরো কিছু জেনে নেই। সাথে মনে পড়ে গেল দুবছর আগে, আমাদের পার্বত্য চট্রগ্রাম নিয়ে আরেকটি পুর্ব-তিমুর বানানো আশংকার কথা, যা নিয়ে সেই সময় সোনার বাংলাদেশ ম্যাগাজিনে একটি লেখাও লিখেছিলাম। পার্বত্য চট্টগ্রাম কি পূর্ব তিমুরের মতো স্বাধীন হতে যাচ্ছে? দেখুন এখানে, Click this link… । দৈনিক নয়া দিগন্ত সেটা ছেপেও ছিল, দেখুন এখানে, Click this link… । সেটিওকেই রিভাইজ করে মুলত আজকের লেখা।

দেশের এক-দশমাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম। শুরু থেকেই সেখানে বাংলা ভাষাভাষী ও পাহাড়ি লোকেরা পাশাপাশি বসবাস করছে। পাশাপাশি বসবাসের পরও সেখানে বাঙালি-পাহাড়িরা তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য সব সময় বজায় রেখেছে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে পাহাড়িদের সে অধিকারে কখনোই কেউ হস্তক্ষেপ করেনি। পাহাড়ি জনপদে মাঝে মাঝেই কিছু অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেখানে সাধারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি দেশের ভূখণ্ডগত নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনীও। পার্বত্য এলাকা হওয়ায় এবং দুটি দেশের সীমান্তে অবস্থিত হওয়ায় জায়গাটির কৌশলগত গুরুত্বও অনেক।

এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরেই বিগত আমলের কথিত শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের নামে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়নসহ একটি সম্পূর্ণ ব্রিগেড এবং ৩৭টি নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলা হচ্ছে, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সাপেক্ষে সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আরো ৩৫টি নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প এবং তিনটি পদাতিক ব্যাটালিয়নসহ একটি সম্পূর্ণ ব্রিগেড প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে এটিই হবে সর্ববৃহৎ এবং উল্লেখযোগ্য সেনা প্রত্যাহার।

ছবিঃ ধারনা করা হচ্ছে কৌশলগত কারনের পাশাপাশি, পার্বত্য চট্রগ্রামের এই নয়নাভিরাম দৃশ্যের নিচে আছে অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদ

কিন্তু কোনো কথাবার্তা আলাপ-আলোচনা ছাড়াই হঠাৎ কেন এত তাড়াহুড়ো করে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলো। এর পেছনে কোনো পর্যায় থেকে কি কোনো চাপ বা বাধ্যবাধকতা আছে? অনেকে বলছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু এবং তৎপরতা মধ্যপ্রাচ্য থেকে নিকট ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থানান্তরিত হবে। আমরা খারাপ দিন অতিক্রম করছি এবং ভবিষ্যতে আরো খারাপ দিন আসছে। শান্তিচুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভেতরেই পাহাড়িদের আরেকটি রাষ্ট্র বানিয়ে দেয়া হলো। মাত্র ২০ বছরের মাথায় পূর্ব তিমুরকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা করে দিয়ে জাতিসঙ্ঘের নেতৃত্বে একটি আলাদা রাষ্ট্র করে দেয়া হয়। কারণ, পূর্ব তিমুরের অধিকাংশ মানুষ খ্রিষ্টান। এভাবেই হয়ত আগামীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ব তিমুরের মডেলে স্বাধীন করে দেওয়া হবে।
এগুলো এতো দিন ছিল জল্পনা-কল্পনা। এনিয়ে খোদ দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আশংকা প্রকাশ করেছে আনুষ্টানিকভাবে, দেখুন দৈনিক আমার দেশে প্রকাশিত আজকের (১০ এপ্রিল ২০১১)

সেনা সদরের সতর্কবাণী : পার্বত্য চট্টগ্রাম যেন পূর্ব তিমুর না হয়
Click this link…

১.

পার্বত্য চট্টগ্রাম অদুর ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে তার একটা ধারনা পেতে নিচের কিছু টুকরো খবরের দিকে নজর দিতে হবে।

ক. বাংলাদেশের ভিতর থেকে ইসরাইলের মতো আলাদা রাষ্ট্র হবে?

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের আলাদা রাষ্ট্র গঠনে সহায়তা চেয়ে সিআইএর কাছে চিঠি দিয়েছেন মাইনরিটি কংগ্রেস পার্টির আন্তর্জাতিক সম্পাদক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন শচীন কর্মকার। ভারতের পূর্ব সীমানা সংলগ্ন বাংলাদেশ ভুখন্ডে ইরাকের কুর্দিস্তানের অনুরূপ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের জন্য একটি পৃথক স্বায়ত্তশাসিত সংখ্যালঘু এলাকা প্রতিষ্ঠায় মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর সহায়তা চেয়েছে দলটি। সাবেক ক্যাপ্টেন শচীন কর্মকার গত ২৭ জুলাই ২০০৭ এক ই-মেইল মেসেজের মাধ্যমে সিআইএ পরিচালকের কাছে এই সাহায্য চেয়ে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে মুসলিম মৌলবাদের বিরুদ্ধে সেফটিক ভালভ। তাই �আজ আমাদের সাহায্য করো, আগামীকাল আমরা তোমাদের সহায়তা করবো। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে নাৎসি জার্মানির পরাজয় ও মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইল রাষ্ট্রের সৃষ্টি। গত প্রায় ৬০ বছর যাবৎ এই ইসরাইল মৌলবাদী আরব রাষ্ট্রগুলো ও গণতান্ত্রিক পাশ্চাত্যের মধ্যে সাফল্যজনকভাবে একটি বাফার রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করে আসছে। যদি ইসরাইল না থাকত, তাহলে এর মধ্যেই আরবরা পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে আরেকটি ক্রুসেড বা মহাযুদ্ধ চাপিয়ে দিত।

ই-মেইল বার্তায় আরও বলা হয়, সিআইএর সামনে বাংলাদেশে দুটি পথ রয়েছে। এ দুটি পথ হচ্ছে- হয় বাংলাদেশকে বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের জন্য চাপ দাও, অথবা কুর্দিস্তানের মতো পূর্ব ভারত সীমান্ত ঘেঁষে সংখ্যালঘুদের জন্য একটি আলাদা স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্র গঠন কর। যদি এই দল ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে রাজনৈতিক ও আর্থিক সাহায্য পায়, তাহলে তারা সহজেই এটা পালন করেতে পারবে। (আমার দেশ, ১২ নভেম্বর ২০০৭)

খ. পার্বত্য চট্টগ্রামে পাচ ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূতদের গোপন বৈঠক

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা ২০০৭ সালে রহস্যজনকভাবে পার্বত্য সফর করেন। ২০ থেকে ২২ মার্চ ২০০৭ পর্যন্ত ৩ দিন ফ্রান্স, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও জার্মানির রাষ্ট্রদূতরা পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে যান। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা হয়নি। সফরকালে রাষ্ট্রদূতরা পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি (জেএসএস) ও আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার সঙ্গে দুদফা গোপন বৈঠক করেন। বৈঠককালে জনসংহতি সমিতির শীর্ষ নেতা রুপায়ন দেওয়ানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। এ প্রসঙ্গে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক হারুনুর রশিদ খান ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ৫টি দেশের রাষ্ট্রদূতের পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূতরা আমাদের কাছে শুধু নিরাপত্তা চান। তারা আমাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়নি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রদূতদের মধ্যে রয়েছেন ডেনমার্কের জেনসন, নেদারল্যান্ডের মেজিংন্ডার, সুইডেনের ব্রিট হারসন, ফ্রান্সের জেকস এন্ডার, জার্মানির ফ্রাঙ্ক মিয়াকি। এদের নেতৃত্বে ছিলেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের ইসি ডেলিগেশন ড:স্টিফেন প্রোইন। জানা গেছে, ২০ মার্চ বিকাল ৩টায় ও ২১ মার্চ বিকাল ৫টায় জেএসএস নেতাদের সঙ্গে তারা দুদুফা মিটিং করেন। ২২ মার্চ এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করেন। ৩টি বাঙালি এনজিওকে আমন্ত্রণ জানালেও রহস্যজনক কারণে মতবিনিময় থেকে তারা বিরত থাকে। বাঙালি ৩টি এনজিও হচ্ছে পাহারা, গেস্নাবাল ভিলেজ ও সাইনিং হিল। (আমার দেশ, ৩১ মার্চ ও ৪ এপ্রিল ২০০৭)

গ. পাহাড়ি জনপদে খ্রিষ্ট্রধর্মে ধর্মান্তরিত করার হিড়িক

নতুন সমস্যা ধর্ম পরিবর্তন, পাহাড়ি জনপদে- ২ তৌফিকুল ইসলাম বাবর প্রেরিত দৈনিক সমকালের এক রিপোর্টে বলা হয়, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে শত শত উপজাতীয় লোক ধর্মান্তরিত হচ্ছে। পাংখোয়া, লুসাই ও বোমাংসহ আরো অনেক উপজাতীয় মানুষের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে এ প্রবণতা বেড়েছে। কিছুসংখ্যক চাকমাও আদি ধর্ম ছেড়ে গ্রহণ করেছে খ্রিষ্ট্রধর্ম। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে বাঙালি-পাহাড়িদের মধ্যে সংঘাতময় পরিস্তিতিতে অস্থির রয়েছে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম। তার ওপর গহিন অরণ্যে পাহাড়িদের মধ্যে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন উপজাতি নেতারা। কারণ এতে পাহাড়িদের মধ্যেই সম্প্রীতিতে ফাটল ধরছে। উপজাতি নেতাদের অভিযোগ, গহিন অরণ্যের দরিদ্র লোকদের ধর্মান্তরিত হতে প্রলোভন দেখিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এ কাজে জড়িত কিছু এনজিও, মিশনারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থা।

খাগড়াছড়িতে পাহাড়িদের ধর্মান্তরের ঘটনা বেশি। রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানেও আছে। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য রুইথি কারবারি সমকালকে বলেন, সেবার নামে এসে পাহাড়িদের ধর্মান্তরিত করতে প্রকাশ্যে কাজ করছে কিছু এনজিও, মিশনারি সংস্থা। ধর্মান্তরিত করার ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে দরিদ্র মানুষদের দুবর্লতাকে। ইতিমধ্যে তাদের প্রলোভনের টোপ গিলেছে বহুসংখ্যক পাংখোয়া, লুসাই, বোমাং এবং কিছুসংখ্যক চাকমা ধর্মাবলম্বী অন্যান্য উপজাতিকে টাগের্ট করেও সংস্থা গুলো কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এ পর্যন্ত কত লোক আদি ধর্ম ছেড়ে খিষ্ট্রান হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ হিসাব বলা মুশকিল। তবে ধর্ম পরিবর্তনের ঘটনা ঘন ঘন ঘটছে কোনো না কোনো পাহাড়ি জনপদে। সংখ্যাটা বড়ই হবে।�

তিন পার্বত্য জেলায় রয়েছে ১৪টি জাতিসত্তা। এর মধ্যে চাকমা, মারমা, রাখাইন, তংচইঙ্গা, পাংখোয়া, লুসাই ও বোমাং উল্লেখযোগ্য। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পাংখোয়া, লুসাই ও বোমাং উপজাতীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক লোক ধর্মান্তরিত হয়েছে। খাগড়াছড়ির পানছড়ি, মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি, বাঘাইছড়ি ও সাজেক এলাকায় গভীর পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষজনই আকৃষ্ট হচ্ছে ভিন্নধর্মে। এনজিও এবং মিশনারিদের সহায়তায় ধর্ম পরিবর্তনকারী মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানসহ বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছে অবহেলিত এসব পাহাড়িবাসী। মিশনারিগুলো সেই দুবর্লতাকে কাজে লাগাচ্ছে। বলা হচ্ছে, খিস্ট্রান হলেই কেউ তাদের জায়গাজমি থেকে উচ্ছেদ করতে পারবে না। খিস্ট্র ধর্ম গ্রহণকারীরা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করছে বলে জানান। (সমকাল, ১০ মার্চ ২০০৮)

ছবিঃ পুর্ব-তিমুরের মত আদিবাসী ধুয়া তুলে পার্বত্য-চট্রগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করা হবে?

ঘ. Free Jummaland (CHT, Chittagong Hill Tracts) in line with East Timor

পার্বত্য চট্টগ্রামকে যে আরেকটি পূব তিমুর বানানোর চেষ্টা হচ্ছে, এটা প্রথম দেখা যায় Peace Campaign Group নামের পার্বত্য বিছিন্নতাবাদীদের একটি গ্রুপের ইমেইলে ও ওয়েব সাইটে। তাদের মতে পার্বত্য অঞ্চলের গেরিলারা আবার সংগঠিত হচ্ছে একটি নতুন মন্ত্রে, আর সেটি হচ্ছে, পূব তিমুরের আদলে এলাকাটি স্বাধীন করা। ইমেইলটির কিছু অংশ দেখুন, বিশেষ করে শেষ লাইন….
(Peace Campaign Group, Fri Apr 25, 2008, Free Jummaland (CHT) in line with East Timor, Bappi Chakma, Over two and one half decades, the indigenous people of the Chittagong Hill Tracts, mostly Buddhists, Hindus and Christians by faith, fought with Bangladesh for autonomy and for protection of their distinct identity and culture threatened with extinction for the latter�s policy of so-called national integration, locally called �Islamization policy�.
The terrors unleashed by Bangladeshi military forced the indigenous people to accommodate with the state-policy of �islamization� without any protest. It is breeding new problems in the CHT which may drag Bangladesh into a vicious and long-standing cycle of violence and instability. One of such problems is, as developments suggest, regrouping of former guerrillas coupled with new and hot bloods completely dedicated to a new idea – Free CHT or Jummaland in line with East Timor)

ই-মেইলটির পুরোটি দেখুন, Click this link…

 

পার্বত্য-চট্রগ্রাম পুর্ব-তিমুর হতে পারে এমন আশংকা প্রকাশ করেছেন খোদ সরকারের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন,

পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলেছে। আমরা এখানে পূর্ব তিমুর বা ইসরাইল হতে দিতে চাইনা। কারো হস্তক্ষেপ সহ্য করবো না। বাঙালীরা এখানে থাকবে কি থাকবেনা এটা দেখা আমাদের দায়িত্ব।’ এ কথাটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে এরশাদ আর কোন কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। (সুত্র, আরটিএনএন, ১৮/০৯/২০০৯) বিস্তারিত দেখুন এখানে, Click this link…

ঙ. এলাকাটিকে ধীরে ধীরে বাংঙ্গালী শূন্য করা

পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঙ্গালীদেরকে রক্ষা করার জন্য পুর্ববর্তী সরকার গুলো চালূ করেছিল গুচ্ছগ্রাম । গুচ্ছগ্রামগুলোর বর্তমান অবস্থা অকল্পনীয়। বর্তমানে বৃদ্ধ পিতা-মাতার সাথে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান তাদের পালিত পশুসহ একই ঘরে পশুর মতই গাদাগাদি করে থাকছে।
পার্বত্য বাঙালিরা বলেছেন, এ অঞ্চল থেকে সেনাক্যাম্প প্রত্যাহার হলে ওই এলাকায় তারা আর বসবাস করতে পারবেন না। তাদেরকে পার্বত্য অঞ্চল ছেড়ে চলে যেতে হবে। এখনো বাঙালিরা পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদা দিয়ে বসবাস করেন। কিন্তু সেনাবাহিনী থাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের কথায় কথায় মারধর করে না। সেনাবাহিনী প্রত্যাহার হলে উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের মারধর করে তাদের ভিটেমাটিছাড়া করবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

ছবিঃ গরুর গোয়াল ঘরে গাদাগাদি করে বসবাস করছে পার্বত্য বাংগালী জনগোষ্টি

সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের ফলে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এখন তাদের নিরাপত্তা কে দেবে? তারা তখন বিএসএফর আক্রমণের শিকারে পরিণত হবে। ফলে নিরাপত্তার জন্য বাঙালি রিফুজিরা ভেতরে চলে আসছে। ওই এলাকা বাঙালিশূন্য হয়ে যাচ্ছে। আর পার্বত্য এলাকাকে বাঙালিশূন্য করাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের লক্ষ্য। মজার ব্যপার হলো খোদ সন্তুলারমা স্বীকার করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সরকার ও স্থানীয় পার্বত্য প্রশাসনক প্রচুর অর্থ দিতে চেয়েছিল, যা দিয়ে পার্বত্য বাঙ্গালীদের সরিয়ে দেশের অন্য জায়গায় পুনর্বাসন করা হয়, এনিয়ে সন্তু লারমার সাক্ষাতটির পড়ুন (প্রথম আলো, ১৬/০৮/২০০৯)কথা হলো পার্বত্য-চট্রগ্রামে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমন কি স্বার্থ আছে যার কারনে প্রচুর টাকা ঢেলে বাংগালীদের ভিটেমাটি ছাড়া করে শুধু চাকমাদের রাখতে হবে?

কৌশলে বাঙালিদের অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করা হচ্ছে। তাদের কোনো উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হচ্ছে না। নিজ দেশে পরদেশী হয়ে আছে। যারা এতদিন একরাতে তিন-শ ঘুমন্ত বাঙালিকে হত্যা করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে। এরাই যদি আবার শান্তিচুক্তি অনুযায়ী পাহাড়ি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেয়, তবে বাঙালি নিধনে কোনো সন্ত্রাসী বাহিনী লাগবে না। তারাই বৈধ অস্ত্র দিয়ে সব বাঙালি নিধন করতে পারবে।

অনেকের মতে, ইউএনডিপি পার্বত্য চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর দরিদ্র বাঙালিদের মাথাপিছু ৫ লাখ টাকা করে দিয়ে বলা হবে, তোমাদের তো এখানে কিছু নেই। থাকো কুঁড়েঘরে, চালাও রিকশা, তোমরা এ টাকা নিয়ে সমতলে চলে যাও। সেখানে তোমরা ভালোভাবে থাকতে পারবে। এভাবে কৌশলে বাঙালিদের বিতাড়ন করে সেখানে উপজাতি খ্রিষ্টানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে।

চ. বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচার যুদ্ধ

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রচার যুদ্ধ নতুন নয়। ১/১১ পর এই প্রচারনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ইন্টারনেট সহ সকল মিডিয়াতে এমন একটি ধারণা প্রচার করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ তাদেরকে পরাধীন করে রেখেছে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সেখানে ব্যাপক ভাবে মানবাধিকার লংঘন করেছে।

২৪ এপ্রিল ২০০৯ সম্প্রীতি মঞ্চ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অজয় রায় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী ও বাঙালি অধিবাসীদের সরিয়ে আনার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে রাজা দেবাশীষ রায় বলেছেন, আদিবাসীদের সম্পত্তি তথা জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতি নেয়ার বিধান রহিত হওয়া উচিত। �বাংলাদেশে আদিবাসী জনগণের প্রচলিত আইনসমূহের সংক্ষিপ্তসার� শীর্ষক এ মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, বছরের পর বছর ধরে ঔপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পার্বত্য এলাকায় সামরিক বাহিনী মোতায়েন সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত।
দেখুন এখানে, Click this link…

এদিকে The Peace Campaign Group নামের পার্বত্য বিছিন্নতাবাদীদের একটি গ্রুপ বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশ গুলোর কাছে স্বারকলিপি দিয়ে দাবী করেছে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিলে পার্বত্য অঞ্চলে ইসলামীকরন চালাচ্ছে ও বাংলাদেশ একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র হয়ে গেছে। দেখুন The Peace Campaign Group গ্রুপের ওয়েব সাইটে(Chittagong Hill Tracts: The Peace Campaign Group � Meeting on Bangladesh)
To Bangladesh Development Partners Participating in A Special Meeting on Bangladesh, 23-24 February 2005, Washington
21 February 2005, Our paper, “BANGLADESH DEVELOPMENT FORUM 2004 AND CHALLENGES FOR DEVELOPMENT IN THE CHITTAGONG HILL TRACTS”, that we had emailed to some of the representatives of Bangladesh development partners prior to the start of the last year’s Forum in Dhaka, foretold: “Islamic fundamentalism is on increase in the CHT to an alarming extent”. Within a short span of time this prediction has manifested itself as a real threat not only to the Jumma indigenous people in the CHT, but also to all democratic institutions in Bangladesh. Today, it is the main challenge to any Bangladesh development planning.
The government has been engaged in doing all appropriate for its hidden program of islamization in the CHT. The government, who defines Bangladesh as an “Islamic democracy” to qualify for international aid, has miserably failed to meet its commitments made at the previous Bangladesh Development Forums for good governance, law and order, establishment of a national human rights commission, separation of the judiciary from the legislative and administrative organs of the government and setting up an ombudsmen or anti-corruption mechanism, among others. Prajnalankar Bhikkhu General Secretary)

০০০০—বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনীকে মৌলবাদী আখ্যাদিয়ে পার্বত্য-গ্রুপের প্রচারনা,
Click this link…

০০০০— বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ইন্ডিয়ান মিডিয়া অপপ্রচার,
Click this link…

০০০০— পার্বত্য অঞ্চলের বাংগালী নিহত হওয়ার ঘটনাকে “জেনোসাইড” হিসেবে চালানো হলেও, চাকমা সন্ত্রাসীদের দ্বারায় বাংগালী নিধনকে বেমালুম চেপে যায় এই মিডিয়াগুলো,
Click this link…

০০০০— সেনাবাহিনী বিরোধী প্রচারনায় এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল, Click this link…

০০০০—পার্বত্য- এলাকায় বাংগালীদের বসবাসকে বলা হচ্ছে বৌদ্ধ বিতাড়ন করে মুসলিম আগ্রাসন হিসেবে,
Click this link…

২.

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উপরের কয়েকটি টুকরো খবর বিশ্লেষনের দাবি রাখে। খরবগুলো আসলেই কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নাকি একটি আরেকটির সাথে অতপ্রতভাবে জড়িত। এগুলো বিশ্লেষন করা যায় এভাবে…

ক. আরেকটি পুর্ব তিমূর কেন দরকার?

পাশ্চাত্যের বিভিন্ন থিংক ট্যাংক বা গবেষনা প্রতিষ্টান গুলোর ভাষ্যমতে এই শতাব্দীতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্র বিন্দু ইউরোপ-আমেরিকা থেকে স্থানান্তর হয়ে চলে আসছে ও আসবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে চায়না, আসিয়ান ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে (দেখুনঃ Mapping the Global Future, CIA Report, 2020, Click this link… )। সম্প্রতি জার্মানীতে প্রকাশিত এক রি্পোর্টে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মদক্ষ জনশক্তি দিন দিন মারাত্নকভাবে হ্রাস পাচ্ছে, যা মুলত অনেকটাই পুরুন করবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পুর্ব থেকে আসা একঝাক মেধাবী তরুণ। জার্মান সমাজবিঙানীরা তাই দক্ষিণ-এশিয়ার নাম দিয়েছে Future Land South Asia (জার্মান ভাষায় বলা হয়, Zukunft Land Sued Asien)। চীন, আসিয়ান অঞ্চল ও দক্ষিণ এশিয়াকে যেখান থেকে নিয়ন্ত্রন করা যায়, এমন একটি �বাফার রাষ্ট্র� আমেরিকা ও তার সহযোগী ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব সময়েই খুছতেছিল। এ ক্ষেত্রে সেই রাষ্ট্রটি খৃষ্টান রাষ্ট্র হলেতো সোনায় সোহাগা। ফিলিপিনস, পুর্ব তিমুর ছাড়া এশিয়ায় আর কোন খৃষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্র নেই। ফিলিপিনসে বহু বছর মার্কিন বাহিনী ঘাটি গেড়ে থাকতে পেরেছিল ও চেয়েছিল তার অন্যতম কারন ছিল দেশটি খৃষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট। ওদিকে খবরে প্রকাশ, মায়ানমার চীনের সহযোগীতায় পরমানু অস্ত্র নির্মানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। খবরটি সত্য হলে মার্কিনীদের কাছে বাংলাদেশে তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরেকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা দরকার, পশ্চিমা শক্তি চীনকে কাউন্টার দেওয়ার জন্য কিছু দিনের জন্য ভারতের সাথে সখ্য গড়েছে, কিন্ত এই সখ্য বেশি দিন স্থায়ী হবে বলে মনে হয় না। এই সখ্য তত দিন পর্যন্ত থাকবে যতদিন পশ্চিমা শক্তি এই অঞ্চলে তাদের নিজ ধর্মের একটি (খৃষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট) বাফার রাষ্ট্র না পাচ্ছে। ভারতের সেভেন সিসর্টাস এর মনিপুরসহ অনেক রাজ্যই অদুর ভবিষ্যতে খৃষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্র হতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমা শক্তি এসব রাজ্যের পুর্ব তিমুরের মতো হস্তক্ষেপ করতে চাইলে ভারত সেটা মেনে নেবে না। তাছাড়া ভারতে উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপির উথ্যান পশ্চিমা বিশ্বের মাথা ব্যাথার কারনও বটে। সম্প্রতি বিজেপির ভাবী প্রেসিডেন্ট হিসেবে যাকে কল্পনা করা হচ্ছে সেই নরেন্দ মোদীকে আমেরিকা দশ বছরের মধ্যে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের দ্বারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে খৃষ্টানদের নির্যাতন, এমনকি পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটছে অহরহ।

অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল, রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত বাংলাদেশে পুর্ব তিমুরীয় বা দক্ষিণ সুদান মডেল বাস্তবায়ন যত সহজ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য কোন দেশে তা সম্ভব নয়। তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থানের (geo-political and geo-strategic location) মত আর দ্বিতীয় কোন লোকেশান এই মুহূর্তে পশ্চিমাদের হাতে নেই। ভারতের সেভেন সিসটার্সের সব রাজ্যই ল্যান্ড লকড (যে সব দেশের মূল ভূ-ভাগের সাথে সরাসরি কোন সমুদ্র সংযোগ থাকে না তাদেরকে ল্যান্ড লকড রাষ্ট্র বলা হয়, যেমন, নেপাল, ভুটান, মঙ্গোলিয়া)। সব মিলিয়ে বলা যায়, আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু এখন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় স্থানান্তরিত হয়েছে।

খ. আরেকটি পুর্ব তিমূর বা ইসরাইল কি সম্ভব?

১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুরে ক্যাথোলিক খ্রীষ্টানের হার ছিল ৩০-৪০% যা ১৯৯০ এর দিকে বেড়ে দাড়ায় ৯০%। ঠিক তেমনি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন খ্রিষ্টান মিশনারি এনজিও পশ্চিমা শক্তি বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহতায় তৎপরতা চালাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। খ্রিষ্টানাইজেশান প্রক্রিয়ার মাধ্যেমে মাত্র ২০ বছরের মাথায় পূর্ব তিমুরকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা করে দিয়ে জাতিসঙ্ঘের নেতৃত্বে একটি পৃথক রাষ্ট্র করে দেয়া হল। অথচ কাশ্মীরের মানুষ মুসলমান হওয়ায় তারা ৬০ বছর ধরে সংগ্রাম করলেও জাতিসঙ্ঘ তাদের রাষ্ট্র গঠনে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

ছবিঃ ভুমধ্যসাগরের তীর ঘেষে ইসরাইল (উপরে)। ঠিক সাগরের কাছাকাছি পার্বত্য চট্রগ্রামও। আয়তনেও কাছাকাছি।

২০০০ শুরূতে নতুন শতাব্দীর জন্য এক বাণীতে ততকালীন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগূরু পরলোকগত পোপ জন পল একটা গুরূত্বপুর্ন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, �গত শতাব্দীতে আমরা আফ্রিকাতে নজর দিয়েছিলাম। আফ্রিকাতে আমাদের মিশন অনেকটাই শেষ। এই শতাব্দীতে আমাদের নজর থাকবে এশিয়ার দিকে�। পোপ জন পল ঠিকই বলেছেন। আফ্রিকার এককালের অধিকাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্র এখন খ্রষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট দেশে পরিনত হয়েছে। আফ্রিকাতে আগের মত যুদ্ধ বিগ্রহ নেই বললেই চলে। এই শতাব্দীর শুরু থেকে ইরাক দখল করে এককালের সম্পদশালী একটি দেশকে মিসকিনে পরিনত করা হল। আফগানিস্তান দখল করা হলো। মজার ব্যাপার হলে, এই দুটি মুসলিম দেশ দখল ও ধবংস করে বলতে গেলে জোর করে ব্যাপক ভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে খ্রিষ্টান মিশনারি এনজিও গুলোকে। আফগানিস্তানে তো খোদ মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীকে জনগনের মাঝে বাইবেল বিতরন ও জোর করে খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহন করানোর অভিযোগ উঠছে ব্যাপক ভাবে।

কাকতালীয় ভাবে দেখা যায় বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম (আয়তন ১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটার), পূর্বতিমুর ( আয়তন ১৪,৫০০ বর্গ কিলোমিটার) ও ইসরাইলের (দখলকৃত আরব ভূমিসহ বর্তমান আয়তন ২০,৫০০ বর্গ কিলোমিটার) আয়তন প্রায় কাছাকাছি। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের রয়েছে চমতকার ভূরাজনৈতিক অবস্থান যা ইসরাইল ও পূর্বতিমুরের সাথেই সহজেই তুলনা করা যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামকে দ্বিতীয় পুর্ব তিমুর বানিয়ে সহজেই ইসরাইল স্ট্যাইলে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু অংশ দখল করে নিতে পারলেই খুব সহজে বঙ্গপোসাগরের সাথে সংযোগ স্থাপিত হবে এই সম্ভাব্য খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্রটির। অনেকের ধারনা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র টেকনাফে ২০-৫০ মেয়াদী পরিক্ল্পনা নিয়ে একটি গভীর সমুদ্র বন্দের জন্য বাংলাদেশকে বার বার চাপ দিচ্ছে মুলত ভাবী এই খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট রাষ্ট্রটির কথা মাথায় রেখেই।

গ্লোবাল পলিটিশিয়ান (global politician) নামক ম্যাগাজিনে বলা হচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা একইসাথে বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রীষ্ট ধর্ম, হিন্দু ধর্ম ও তাদের নিজস্ব ধর্ম পালন করে থাকে। এখানে উপজাতিদের কত ভাগ খ্রীষ্ট ধর্ম গ্রহন করেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান কারও কাছেই নেই। বিশ্লেষকদের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিমধ্যেই খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট এলাকায় পরিনত হয়েছে। কৌশলগত কারনে (আরও কিছু সময় দরকার পরিপুর্ন খ্রিষ্টানাইজেশান প্রক্রিয়া শেষ করতে)পশ্চিমা শক্তির পরার্মশে তা কম করে দেখানো হচ্ছে।

গ. উপজাতি যখন আদিবাসী

আমরা এতদিন থেকে অবাংগালী অধিবাসীদের উপজাতি (Tribal) হিসেবেই জানতাম। ইতিহাসবিদ ও নৃবিঙানীরাও (anthropologists) বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা এদেশের উপজাতি । বাংগালীরা হাজার বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের অবাংগালীরা মাত্র তিন-চার শত বছর আগে সেখানে বসবাস শুরু করেন। বাংলাদেশ সংবিধানও বলে এরা উপজাতি। বিশ্ববি্দ্যালয় পড়ার সময় শুনেছি পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু সহপাঠী উপজাতী কোটায় ভর্তি হয়েছে। কোন দিন ওদের আদিবাসী বলা হত বলে জানতাম না। ১৫-২০ আগেও এদের উপজাতি বলা হতো। এখন দাবী করা হচ্ছে এরা নাকি আদিবাসী (Aborginals)। আর এই কোরাসের সাথে যোগ দিয়েছে মস্তিক বিক্রি কারি কিছু মিডিয়া। যাই হোক উপজাতি- আদিবাসী নিয়ে বির্তক করা আমাদের এই লেখার মুল থিম নয়।

মুলত গত এক দশক ধরে ঢাক ডোল পিটিয়ে এদের বলা হচ্ছে আদিবাসী। প্রতিদিনেই যাক-জমকের সাথে পালন করা নানান কিছিমের অনুষ্টান। তোলা হচ্ছে নানান সব দাবী দাওয়া। তাদের দিতে হবে আলাদা সংবিধান, আলাদা ভাষা। তার পর আলাদ রাষ্ট্র। এসব দাবীর উপর দেওয়া হচ্ছে ব্যাপক মিডিয়া কভারেজ। ভাবখানা দেখে মনে হয় এত দিন উপজাতিরা বাংলাদেশে সুখে শান্তিতে বসবাস করতো। হটাত করে কিছু দিন আগে বাংগালীরা বাংলাদেশে এসে তাদের (কথিত আদিবাসীদের )বিতাড়ন করেছে, তাই আমেরিকা-ইউরোপ আসুক, দেখুক আর তাদের জন্য একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের ব্যাবস্থা করে দিক। বিদেশের টাকায় পরিচালিত কিছু এনজিও, মস্তিক বিক্রি কারি কিছু মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবীদের অবিরত প্রচেষ্টা বৃথা যায়নি। সম্প্রতি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারী সব নথি পত্রে উপজাতি শব্দের পরিবর্তে আদিবাসী সংযোজন করা হবে।

মনে করা হয়, সন্তু লারমারা মুলত স্বশত্র সংগ্রাম ত্যাগ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের থিংক ট্যাংক বা গবেষনা প্রতিষ্টান গুলোর পরার্মশে। তারা বুঝে যায় স্বশত্র সংগ্রাম করে পার্বত্য চট্টগ্রাম স্বাধীন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে চাল দিতে হবে ধীরে ধীরে খ্রিষ্টানাইজেশান প্রক্রিয়া ও আদিবাসী কার্ড। এই দুটি বিষয়কে হাইলাইটস করলেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এগিয়ে এসে বাংলাদেশকে বাধ্য করবেন পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাধীনতা দিতে। ঠিক যেমন করা হলো পূর্ব তিমুরে।

উপজাতীয়দের নামে মূলত সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে চাকমারা। তারা ৮৬ শতাংশ শিক্ষিত। বাঙালিরা মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষিত এবং অন্যান্য যেসব উপজাতি রয়েছে তারা কোনো হিসাবের মধ্যে পড়ে না। রাষ্ট্রের যেকোনো জায়গায় জমি অধিগ্রহণ করার ক্ষমতা রাখে রাষ্ট্র। কিন্তু শান্তিচুক্তির নামে রাষ্ট্র নিজের পাহাড়ে এ অধিকার হারিয়েছে। এমনকি খনিজসম্পদ উত্তোলনের বিষয়ে বিদেশীদের সাথে চুক্তি করারও ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সন্তুদের।

উল্লেখ্য পার্বত্য চট্রগামের উপজাতিরা কখনোই আদিবাসী (Indigeneous) ছিলো না। ইতিপুর্বের কোন নথিপত্রে এদের আদিবাসী হিসেবে দেখনো হয়নি, বলা হয়েছে এরা মুলত উপজাতি (Tribal/Sub-caste)।

০০০০এনিয়ে দেখুন, বাংলাদেশ সরকারের পার্বত্য-বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট। সেখানে উপজাতিদের (Tribals) আদিবাসি (Indigeneous) বলা হয়নি,
এমনকি ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তিতেও উপজাতিদের আদিবাসি বলা হয়নি
Click this link…

oooo—রা উপজাতি, আদিবাসী নয়, এনিয়ে বিশিষ্ট গবেষক চট্রগ্রাম বিশ্বদ্যালয়ের অধ্যাপক ড হাসান মোহাম্মদের কলামটি পড়ুন,
Click this link…

০০০০—-প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞান গবেষক, ড এবনে গোলাম সামাদ, পার্বত্য তিন জেলা নিয়ে ষড়যন্ত্র রুখোঃ দেশবাসী সচেতন হও, শীর্ষক কলামে

এখানে এমন অনেক উপজাতির বাস, যারা ইংরেজ আমলের আগে ছিল না। ইংরেজ আমলে প্রধানত আরাকান থেকে এখানে উপনিবিষ্ট হয়েছে। এদিক থেকে বিচার করলে এখানে তাদের বলতে হয় পরদেশি। ওই অঞ্চলের ভুমিজ সন্তান তারা নয়। অনেকে না জেনে তাদের মনে করেন আদিবাসী। চাকমা, মারমা প্রভৃতিকে আদিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করা খুবই বিভ্রান্তিকর।
(দেখুন, আমার দেশ, ২০০৯-০৫-০৬)

০০০০—সেকুলার (আওয়ামী)পন্থি বুদ্ধিজীবী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর, বাংলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন লিখেছেন, ‘Most of the tribal people move into this land from areas now in Myanmar (former Burma) during the period from the 15th to the mid-nineteenth centuries. The tribes belonging to the Koki group were the earliest to settle, and the Chakmas came much later (War and Peace in the Chittagong Hill Tracts, P.5, published by Agamee Prakashni Dhaka, 1999).

০০০০—-নৃতত্তবিদ T.H Lewin-এর মতে, ‘A great portion of the Hill tribes, at present living in the Chittagong Hills, undoubtedly came about two generations ago from Arakan. This is asserted both by their own traditions and by records in the Chittagong Collectroate (1869, P. 28)„

রাঙামাটিতে সাংস্কৃতিক উৎসব সংবিধানে ‘আদিবাসী’ না বলায় যোগ দেননি অনেকে
Click this link…

ঘ. পুর্ব তিমূর বাস্তবায়নে সহযোগী যারা

আরেকটি পূর্ব তিমূর বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম, ইউরোপীয় কমিশন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও তার প্রচার মাধ্যম। বিপুল সার্কুলেশানের অধিকারী একটি পত্রিকা, তার ইংরেজী সহযোগীসহ প্রায় সব প্রিন্ট, ইলেট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া। টেলিভিশন অনবরত বলছে, পাহাড়িরা নিগৃহীত। তাদের রক্ষা করতে হবে। ইউএনডিপি সেখানে পাহাড়িদের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে। খবরে প্রকাশ, দু�টি প্রভাবশালী দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সেখানে এজেন্সি খুলে বসেছে। চরম বাংলাদেশ বিরোধী হিসেবে পরিচিত বৃটিশ লর্ড সভার মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান লর্ড এরিক এভেরি্র নেতৃতে গঠিত কথিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ভূমি কমিশান সারা বিশ্বে বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ গুলোতে ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছে, বাংলাদেশের আদিবাসী(?)দের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সেখানে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে ইত্যাদি।

 

ছবিঃ শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত করছেন লর্ড এভেরি
Click this link…

লর্ড এরিক এভেরি সম্পর্কে জানুন এখানে,
Click this link…

তার ব্লগেই দেখুন, লেখা হয়েছে তিনি Founder, Parliamentarians for East Timor, 1988; এই এভেরী ১৯৮৮ সালে আন্তর্জাতিক ভূমি কমিশন গঠন করে পুর্ব তিমুর বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে অন্যতম ভুমিকা পালন করেছিলেন।

এরিক এভেরির কমিশন নিয়ে আরো পড়ুন,
Click this link…

 

 

 

ছবিঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ভূমি কমিশানে লর্ড এরিক এভেরি্র সাথে আছেন এদেশীয় ড. জাফর ইকবাল (উপরে), এ্যাড সুলতানা কামাল চক্রবর্তী (স্বামী শ্রী রঞ্জন চক্রবর্তী) (২য় ছবি), ড. স্বপন আদনান (সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়), ব্যারিষ্টার সারা হোসেন (স্বামী ডেভিড বার্গমান) (৩য় ছবি), ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরদা (শেষের ছবিতে বাম পাশের মহিলা) প্রমুখ

এর সাথে যোগ হয়েছে মুক্তমনা নামের পার্শ্ববর্তী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার অর্থে পরিচালিত কিছু গ্রুপ, যাদের মুল কাজেই হচ্ছে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো। সম্প্রীতি মঞ্চ ও অজয় রায়রা (বামপন্থি বুদ্ধিজীবী অজয় রায় ইন্টারনেট ভিত্তিক গ্রুপ মুক্ত-মনার প্রধান উপদেষ্টা। এদের মুল কাজেই হচ্ছে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষী ছড়ানো) হচ্ছেন সেই গ্রুপ গুলোর বাংলাদেশী সহযোগী। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বলা যায়, পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়েছে শুধু নিরাপত্তার জন্য, সেখানে কোনো উপনিবেশ কায়েমের জন্য নয়। তারা সেখানে কোনো ধরনের অন্যায় কাজেও লিপ্ত নয়। একটি দেশের সেনাবাহিনী নিজের দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। �এ কেমন দাবি!

ভারতীয় সেভেন সিস্টার্সে ৪০ বছর ধরে প্রায় ৪ লাখ সৈন্য মোতায়েন আছে। কাশ্মীরে গত দুই দশক ধরে পাচ লাখেরও বেশী ভারতীয় সেনা মোতায়েন আছে। এসবের বিরুদ্ধে কথিত কোন মানবাধিকার গ্রুপ টু শব্দ করতেও দেখা যায় না। আর পাহাড়ে আমাদের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর অভিযোগও নেই। তাহলে কেন তাদের সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হবে? তাহলে সম্প্রীতি মঞ্চের এ দাবির উদ্দেশ্য কী? তারা কি দেশের এক-দশমাংশ ভূমির নিরাপত্তা চায় না? তারা কী বাংলাদেশের এক-দশমাংশ এলাকা অরক্ষিত অবস্থায় পেলেই খুশি হবে?

ঙ. ১/১১ কি একটি রিহার্সেল ছিল?

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতির কারনেই গত তিন দশকে সন্তু লারমাদের ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিছিন্নতাবাদীদের স্বর্গ রাজ্য হতে পারেনি। এক্ষেত্রে পাহাড়ী ও বাংগালীরা সেনাবাহিনীর কারনে নিরাপদে নিজস্ব জীবনযাত্রা, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে পাশা পাশি বসবাস করছে। বলতে গেলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীই অনেক ত্যাগের বিনিময় পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষা করেছে। সুতরাং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ অঞ্চলটি রক্ষার অন্যতম শক্তি। তাই তাদেরই মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে হবে। এ কাজ করা হয়েছে মুলত ১/১১ আগে ও পরে। জাতি সংঘের শান্তি মিশন থেকে সেনা ফিরিয়ে দেওয়া হবে এই ভয়ে (যদিও অনেকে বলছেন ভয়টি ছিল ভুয়া) যদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মইন টাইপের উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি বিদেশী কূটনৈতিক সহায়তায় ১/১১ তৈরী করতে পারে, তাহলে তো সত্যি সত্যি শান্তি মিশন থেকে সেনা ফিরিয়ে দিলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব সেনা পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে তো বটেই খোদ স্থায়ী ক্যান্টনমেন্ট ছেড়েই চলে আসবে।

মজার ব্যাপার হলো, ১/১১ পরপরেই পাচ ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত গোপন সফরে পার্বত্য চট্টগ্রাম গেছেন। ১/১১ পর থেকেই উপজাতিদের আদিবাসী হিসেবে মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে। লর্ড এরিক এভেরি নেতৃতে গঠিত কথিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ভূমি কমিশানও বেশ জোরে শোরে সারা বিশ্বে চিতকার শুরু করেছে সেখানে মানবাধিকার গেল বলে। তাহলে কি বলা যায় ১/১১ শুধু বাংলাদেশে বিদেশী কুটনৈতিকদের অবাদ বিচরণ ক্ষেত্রই করেনি, পার্বত্য চট্টগ্রামকে আরেকটি পুর্ব তিমূর, দক্ষিণ বা ইসরাইল করার পথও সুগম করে দিয়েছে?

ছবিঃ এভাবেই দেশের এক-দশমাংশ এলাকা পার্বত্য-চট্রগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হবে? আর আমরা সুদানী রাগাতের মত চেয়ে চেয়ে দেখবো?